‘রোহিঙ্গা নিধন পরিকল্পিত ছিল’

প্রকাশিত: ১১:৫২ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৯, ২০১৮

গত আগস্টে স্বাধীনতাকামী রোহিঙ্গাদের হামলার কয়েক মাস আগে থেকেই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ‘ব্যাপক ও পদ্ধতিগত প্রস্তুতি’ গ্রহণ করেছিল বলে একটি মানবাধিকার সংস্থার নতুন একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ২৫ আগস্টের হামলাকে একটি অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রক্তাক্ত আক্রমণ চালায়। তাদের এই হামলার মুখে প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) ফর্টিফাই রাইটস নামে একটি অধিকার গ্রুপ এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে।১৬২ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনের শিরোনাম দেয়া হয়েছে ‘দে গেইভ দেম লং সোর্ডস’।

প্রতিবেদনে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘মানবতা বিরোধী ও গণহত্যার’ অভিযোগ আনা হয়েছে।

ফর্টিফাই রাইটসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাথু স্মিথ বলেছেন, ‘গণহত্যা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘটে না। এ ধরনের অপরাধের জন্য দায়মুক্তি দিলে ভবিষ্যতে আরও বেশি আক্রমণ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের পথ সৃষ্টি করবে। পুরো বিশ্ব অলস বসে থেকে আরেকটি গণহত্যা ঘটার দৃশ্য দেখার অপেক্ষায় থাকতে পারে না। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সেটাই এখন ঘটছে।’

ফর্টিফাই বলছে, রোহিঙ্গাদের দেশত্যাগে বাধ্য করা শুধু আরসার ওই আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় ঘটেনি। এটা আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিল মিয়ানমার সেনাবাহিনী। আগস্ট মাসে আরসার ওই আক্রমণ চালানোর আগে ২০১৬ সালে এ ধরনের আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল। ওই সময়েও মিয়ানমার সেনাবাহিনী ধর্ষণ, হত্যার মতো কর্মকাণ্ড চালিয়ে হাজারো রোহিঙ্গাকে দেশত্যাগে বাধ্য করেছিল।

ফর্টিফাই বলেছে, ২০১৬ সালের ওই ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেনি। এতে মিয়ানমার সেনাদের সাহস বেড়েছে। তারা দ্বিতীয় আক্রমণের অপেক্ষায় ছিল, যাতে রোহিঙ্গাদের পুরোপুরি তাড়ানো যায়।

ফর্টিফাইয়ের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রোহিঙ্গাদের আগে থেকে তাড়ানোর পরিকল্পনার পদ্ধতিগত প্রস্তুতির বিশদ বিষয়টি উঠে এসেছে। এ ছাড়া বেসামরিক রোহিঙ্গাদের আগে থেকে দুর্বল করে ফেলার বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেছে তারা। এর মধ্যে রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে প্রতিরোধে ব্যবহার হতে পারে এমন ধারালো বস্তু সরিয়ে ফেলা, স্থানীয় রোহিঙ্গাবিরোধীদের প্রশিক্ষণ, বেড়া বা স্থাপনা ধ্বংস, রোহিঙ্গাদের খাবার ও জীবন রক্ষাকারী ওষুধ বা অস্ত্র সরিয়ে ফেলা, অপ্রয়োজনে রাখাইন রাজ্যে প্রচুর নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য জড়ো করার মতো বিষয় রয়েছে। সূত্র: আল জাজিরা

Comments